সোমবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৫, ১২:১৫ পূর্বাহ্ন

তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ জনগোষ্ঠীর সন্ধানে অ্যাপটেক ও এডিএন

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ডেস্ক রিপোর্ট: ‘দক্ষ হোন জীবন পাল্টে যাবে’ এই স্লোগান নিয়ে বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে কাজ করছে বিশ্বব্যাপী আইটি প্রশিক্ষণে সমাদৃত প্রতিষ্ঠান অ্যাপটেক ইন্টারন্যাশানাল ও এডিএন এডু সার্ভিসেস লিমিটেড।

এডিএন এডু সার্ভিস ও অ্যাপটেক বাংলাদেশ কর্তৃক বৃহস্পতিবার বেসিস অডিটোরিয়ামে আয়োজিত মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠানে এডিএন এডু সার্ভিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন কান্তি সরকার এই তথ্য তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাপটেক ইন্টারন্যাশানালের সিনিয়র ম্যানেজার সোমশুভ্র বকশী এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকরা।

স্বাগত বক্তব্যে তপন কান্তি সরকার বলেন, বর্তমানে ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রযুক্তির প্রয়োগ অপরিহার্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্যবসায়িক উন্নয়ন বা সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য আজ ব্যবসায়িক কাজে প্রযুক্তির প্রয়োগ অবশ্যম্ভাবি।

বাংলাদেশ একটি বিপুল সম্ভাবনার দেশ। সম্প্রতি প্রকাশিত বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০১৬-১৭ অর্থবছরের শ্রমশক্তি জরিপের প্রতিবেদনে দেখা যায়, দেশে মোট কর্মোপযোগী মানুষের সংখ্যা ১০ কোটি ৯১ লাখ।

এর মধ্যে কর্মে নিয়োজিত ৬ কোটি ৮ লাখ মানুষ। বাকি ৪ কোটি ৮২ লাখ ৮০ হাজার মানুষ কর্মক্ষম তবে শ্রমশক্তির বাইরে। এর মধ্যে শিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত ও অশিক্ষিত নারী-পরুষ আছে।

এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে যদি কর্মউপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থা (ইন্ডাস্ট্রির চাহিদা অনুযায়ী) প্রদানের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত করা যায় তাহলে বর্তমান সরকারের ঘোষিত ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে অতি সহজে পৌঁছাতে পারব।

আমাদের আইটি ইন্ডাস্ট্রির এখন পর্যন্ত কার সীমাবদ্ধ সফলতার সবচেয়ে বড় যে কারণ, তাহলো দক্ষ জনশক্তির প্রকট অভাব। আমাদের অনেক প্রোগ্রামার আছে, কিন্তু একটু গভীরে যাওয়ার মত লোক নেই।

দক্ষ সিস্টেমস্ অ্যানালিষ্ট বা প্রোজেক্ট ম্যানেজার চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। দক্ষতা না থাকায় আমরা অনেক কাজ সুষ্ঠুভাবে করতে পারি না। এর ফলশ্রুতিতেই বিদেশী কোম্পানীগুলো তাদের সফটওয়্যার আর সেবা নিয়ে ঢুকে পড়ছে।

তিনি আরও বলেন, আপনার জানেন, সাইবার সিকিউরিটি আমাদের দেশে একটি বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তিতে আমরা যত অগ্রসর হচ্ছি ততই নিরাপত্তা ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। এর থেকে উত্তরনের জন্য আমাদেরকে দক্ষ প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তৈরি করতে হবে।

বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির ২০১২ সালের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলেছে, বাংলাদেশে প্রতি বছর নতুন ২২ লাখ কর্মক্ষম মানুষ শ্রমবাজারে প্রবেশ করে। কিন্তু কাজ পায় মাত্র ৭ লাখ। বাকি ১৫ লাখ থাকে বেকার।

এর মধ্যে উচ্চশিক্ষিত অর্থাৎ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে যারা শিক্ষাজীবন শেষ করেছেন তারাও রয়েছেন। প্রতি বছর এই ১৫ লাখ শ্রমশক্তি বেকারের সংখ্যা শুধু বাড়িয়েই চলেছে।

এই বিপুল জনসংখ্যাকে যদি কারিগরী শিক্ষায় শিক্ষিত করে যদি চাকরির পেছনে না ছুটে ফ্রিল্যান্সিং বা উদ্যোক্তা হিসাবে তৈরি করা যায় তাহলে এই বিপুল জনগোষ্ঠী আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখতে পারবে।

অ্যাপটেক ইন্টারন্যাশানালের সিনিয়র ম্যানেজার সোমশুভ্র বকশী বলেন, অ্যাপটেক ইন্টারন্যাশানাল বিগত ৩১ বছর ধরে ৪০টিরও বেশি দেশে দক্ষ জনবল গঠনে কাজ করে যাচ্ছে।

অ্যাপটেকের ট্রেনিং মেথডলজি বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। অ্যাপটেকের এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সফট্ওয়্যার, হার্ডওয়্যার ও নেটওয়ার্কিং, এরিনা মাল্টিমিডিয়া ও ইংলিশ লার্নিং-এ দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরির উদ্দেশ্যে আমরা এডিএন এডু সার্ভিসেসের মাধ্যমে বাংলাদেশে কার্যক্রম শুরু করেছি।

আমরা আশা করি, অ্যাপটেকের বিভিন্ন কোর্সে ভর্তি হয়ে তরুণরা তাদের দক্ষতা বাড়াতে পারবে এবং দেশের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বাজারে নিজেদের দক্ষতার স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হবে।

আমরা অ্যাপটেকের কার্যক্রমকে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতে ফ্র্যাঞ্চাইজি মডেলে কাজ করে যাচ্ছি। এই কার্যক্রমে আগ্রহী ট্রেনিং ইন্সিটিটিউটগুলো আমাদের সাথে যুক্ত হয়ে দক্ষ জনবল তৈরিতে তাদের অবদান রাখতে পারবেন।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন এডিএন গ্রুপের চীফ ডিজিটাল বিজনেস ও মার্কেটিং অফিসার রুহুল্লাহ রায়হান আল-হুসাইন এবং এডিএন এডু সার্ভিসেস লিমিটেড এর বিজনেস প্রধান নুরুল আলম সোহেল। অনুষ্ঠানে শেষ পর্যায়ে বক্তারা সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com